Coleman (1968) রাজনৈতিক পরিবেশ বিবেচনায় মডার্নালাইজেশন সম্পর্কে যে ধারণা দেন তা অনেকটা SMELSER এর সামাজিক পরিপেক্ষিতের মতোই। কেননা দুজনেই গাঠনিক পরিবর্তনের কথা বলেছেন।
Coleman ৩ধরনের প্রক্রিয়ার কথা বলেন-
১) রাজনৈতিক গঠনের বিভেদ।
২) রাজনৈতিক সংস্কৃতির নিরপেক্ষতাকরণ (সমতার ভিত্তিতে)
৩)সমাজের রাজনৈতিক পদ্ধতির সক্ষমতা ত্বরাণ্বিতকরণ।
১) Coleman এর মতে, রাজনৈতিক বিভেদকরণ হলো রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ঐতিহাসিক ভাবে চলে আসা রাজকীয় ঐতিহ্য। Coleman বিভেদকরণ বলতে, রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান ও আইনের পৃথকীকরণ ও নির্দিষ্টকরণকেই বুঝিয়েছেন। উদাহরণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনগত নিয়মকে ধর্ম থেকে আলাদা করা, প্রশাসনিক গঠন ও সরকারী রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থেকে ধর্ম ও মতাদর্শকে আলাদা করা।
২) Coleman মনে করেন সমতাকরণই হলো আধুনিকীকরণের মূল ভিত্তি। মডার্নালাইজেশনে রাজনীতি মানেই সমতা খোঁজা ও তা আদায় করা।
তিনি সমতা করণের ক্ষেত্রে যে বিষয় গুলো তুলে ধরেন-
১) বৈশ্বিক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকত্বের ধারণা (বন্টনের ভিত্তিতে সমতা)
২) সরকারের সাথে নাগরিকদের আইনগত সম্পর্ক উন্নয়নে ব্যাপকতা (আইনগত সমতা)
৩) রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক আইনের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ ও বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রাধান্য সৃষ্টি (সুযোগের সমতা)
৪) রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সাথে জনপ্রিয়তার সংযুক্তি (অংশগ্রহণ এর সমতা)
৩) Coleman মনে করেন, পৃথকীকরণ ও সমতাকরণের আগ্রহই রাজনৈতিক পদ্ধতির সক্ষমতাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। মূলত মডার্নালাইজেশন কে দেখা হয় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সক্ষমতাকে প্রগতিশীল অর্জন দ্বারা।
রাজনৈতিক সক্ষমতাকে উদ্ভাসিত করতে যে সকল রাজনৈতিক কার্যাবলী কে ত্বরান্বিত করা হয়-
১) রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের মানদন্ড নির্ধারণ।
২) কার্যক্ষমতা কে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন।
৩) কেন্দ্রীয় সরকারী প্রতিষ্ঠানের বিচক্ষণ ক্ষমতা।
৪) রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে মোট স্বার্থ আদায়ে ব্যাপকতা।
৫) রাজনৈতিক সংগঠন গুলো প্রতিষ্ঠানকরণ ও প্রকৃয়াকরণ।
৬) সমস্যা সমাধানে সক্ষমতা।
৭) নতুন রাজনৈতিক চাহিদা ও রাজনৈতিক সংগঠন বজায় রাখার সক্ষমতা।
সর্বশেষ তিনি বলেন, পৃথকীকরণ ও সমতাকরণের চাহিদা ফলে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় উত্তেজনা ও বিভেদ সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, তৃতীয় বিশ্বে রাজনৈতিক মডার্নালাইজেশনে ছয় ধরনের সংকট তৈরি হয়।
১) জাতীয় পরিচয়ের সংকট (আদিম সমাজ হয়ে আধুনিক সমাজে আসায় আনুগত্যের পার্থক্য)
২) নতুনরাষ্ট্রের জন্য নতুন রাজনৈতিক বৈধতার সংকট।
৩) অনুপ্রবেশের সংকট ( কেন্দ্রীয় সরকারের সমাজে নিয়মনীতি তৈরিতে জটিলতা)
৪) অংশগ্রহণের সংকট ( রাষ্ট্রের উঠতি চাহিদার সাথে সংযোগ কারী প্রতিষ্ঠানের সামঞ্জস্যতা বা কম বেশি থাকলে(
৫) বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে যাওয়া রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রীকরণের সংকট।
৬) বন্টনের সংকট (যখন রাষ্ট্র অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আনতে পারে না ও গণমানুষকে পণ্য, সেবা ও মূল্যবোধ বন্টনের মাধ্যমে সন্তুষ্ট করতে পারে না)
মূলত এ সকল সংকট মোকাবেলা করাই একটি রাষ্টের রাজনৈতিক মডার্নালাইজেশন ঘটে।