প্রারম্ভিকাঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর সময়কাল থেকে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশে NGO একটি আলোচিত এবং আলোড়ন বিষয়। তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশসমূহের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে দারিদ্রতাকে পুঁজি করে NGO কার্যক্রমের বিকাশ ঘটে। তাছাড়া সরকারি সংস্থাসমূহ যখন দেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে ব্য্র্থ হচ্ছিল তখনই দাতাদেশগুলোর উদ্যোগে এবং কিছু দেশীয় ব্যক্তি বর্গের উদ্যোগে সরকারি সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থার কার্যক্রম শুরু করা হয়। বাংলাদেশের ন্যায় কৃষিভিত্তিক দেশের পল্লী উন্নয়নে এই NGO দের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এরা গ্রামের জনমূল পর্যায়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এ নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের দেশী ও বিদেশি NGOর সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে।
NGO কিঃ NGO এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Non-Government Organization. যার অর্থ হচ্ছে বেসরকারি সংগঠন। এ সংস্থাগুলো দেশের কোন না কোন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নিয়োজিত থাকে। সম্পূর্ণ বেসরকারি আর্থিক যোগান ও সুষ্ঠ পরিকল্পনার আলোকে সমাজ উন্নয়নের লক্ষে পরিচালিত সংস্থা বা সংগঠনসমূহক্র NGO বলে আখ্যায়িত করা হয়। এটি এক ধরণের সাহায্য সংস্থা, যা প্রত্যক্ষভাবে সরকারি সহায়তা বা সরকারি নিয়ন্ত্রণে চলে না। এদেরকে Non-political organization ও বলা হয়।
পড়নের মতে, NGO হতে পারে গবেষণাধর্মী সংস্থা পেশাজীবীদের সংস্থা, শ্রমিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, চেম্বার অব কমার্স। যুব সংগঠন, পর্যটক সংস্থা বেসরকারি ফাউন্ডেশন, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক দাতা কিংবা উন্নয়ন সংস্থা এবং অন্য যে কোন সংগঠন যার চরিত্র বেসরকারি ধরনের।
সাধারণত নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহের আলোকে NGO কে চিহ্নিত করা যায়ঃ
১) যেসব সংস্থা বিশ্বব্যাপী, দেশব্যাপী কিংবা বিশেষ অঞ্চলে উন্নয়নমূলক, সেবামূলক ও শিক্ষামূলক কাজ করে।
২) NGO গুলো সাধারণত বিদেশী সাহায্যে পরিচালিত হয়। তবে এগুলো সমাজকল্যাণ বিভাগের রেজিঃ প্রাপ্ত।
৩) সরকারের অনুমোদন নিয়ে এরা কাজ করে।
সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, বেসরকারি উদ্যোগে দৃশ্যতঃ বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকান্ডে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোই NGO নামে পরিচিত।
পল্লী উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচনে NGO এর ভূমিকাঃ
কৃষি উন্নয়নঃ বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। গ্রামীণ দরিদ্র জনসংখ্যার অধিকাংশইই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। কৃষির উন্নয়ন হলে দরিদ্রতা কিছুটা লাঘব হবে। কৃষি উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন NGO কৃষি ঋণ দিচ্ছে দারিদ্র জনসাধারণকে। এতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দরিদ্রতা বিমোচনে এগিয়ে যাচ্ছে।
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পায়নঃ দেশে কর্মরত NGO গুলো দরিদ্র জনগনকে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পায়নের জন্য ঋণ দিচ্ছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পায়নের ফলে দারিদ্রতা দূরীভূত হচ্ছে এবং পল্লীর উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে।
মানব সম্পদ উন্নয়নঃ মানবিক উন্নয়ন, ব্যক্তির মর্যাদা, ব্যক্তিত্ব ও সৃজনশীলতার বিকাশ এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কাঠামোর সম্পর্কে, শোষণ ও আধিপত্য সম্পর্কে বিষয়ে বিশ্লেষণমূখী জ্ঞানার্জনে সহায়তার মাধ্যমে মানুষের নিজের করণীয় আবিষ্কার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে কার্যকর ভাবে উদ্যোগী করে তোলে। পুরানো কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও জীবন বিমুখী দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীতে সমাজ ও সমস্যাকে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে বাস্তব ও রাজনৈতিক ধ্যান ধারণায় উদ্ধুত করার লক্ষ্যে NGO সমূহের প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য।
যেমনঃ প্রাথমিক প্রশিক্ষণ, উন্নত প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন দল বা এলাকাতে মতবিনিময় কর্মসূচীর আয়োজন, বিশ্লেষণধর্মী সাপ্তাহিক আলোচনা, সেমিনার ও কর্মশালায় যৌথ সামাজিক ক্রিয়া ও আর্থসামাজিক প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে মানবিক উন্নয়নের উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে বিভিন্ন NGO বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
মূলধন সরবরাহঃ বিভিন্ন NGO মূলধন গঠনের উপর জোর দিয়েছে। মূলধনের অভাবে গ্রামের দরিদ্র জনগন কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভৃতি কাজ করতে পারছে না। NGO গুলো কৃষি, শিল্প, ব্যবসা, বাণিজ্য করার জন্য দরিদ্র জনগণকে মূলধন সরবরাহ করছে। যার ফলে দরিদ্র জনগণ মূলধন বিনিয়োগ করে দারিদ্রতা দূরীকরণে সক্ষম হচ্ছে।
কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আয় বৃদ্ধিঃ আমাদের দারিদ্রতার অন্যতম কারণ হলো বেকারত্ব। NGO গুলো বেকারত্ব নিরসন কল্পে তথা কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আয় বৃদ্ধির জন্য ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। NGO গুলোর ঋণ সহায়তা কার্যক্রম গুলো হলো, ভূমিহীনদের সেচ প্রকল্প, খাল ও পুকুরে মৎস্য চাষ, উপকূল এলাকার মৎস্য আহরণ, তাঁত শিল্প, ভূমিহীন বর্গাচাষীদের জন্য কৃষি উপকরণ বিতরণ প্রভৃতি। এছাড়া শত শত নারী পুরুষকে গবাদিপশু, হাঁস মুরগির টিকাদান ও চিকিৎসা, বৃক্ষ-নার্সারী প্রভৃতি, শিক্ষা ও ঋণ দান করে দারিদ্র বিমোচনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
মহিলা সমাজের উন্নয়নঃ বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক হলো মহিলা। কাজেই মহিলাদের অবস্থার উন্নয়ন ছাড়া দেশ থেকে দারিদ্রতা দূর করা যাবে না। এ লক্ষ্যে NGO গুলো নারী শিক্ষার প্রসার ও মহিলাদের কর্মসংস্থানের জন্য হাসমুরগি পালন, গরু ছাগল পালন, রেশম চাষ প্রকল্প মৌমাছি পালন, ধানভাঙা, চিড়া-মুড়ি তৈরি, কুটির শিল্প ও হস্তশিল্প যেমনঃ বাঁশ, বেত, মাটি ও কাঠের কাজ প্রভৃতি সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখে/রাখছে।
শিক্ষা বিস্তারঃ দেশের দারিদ্রতা বিমোচনের লক্ষ্যে NGO গুলো শিক্ষা বিস্তার করে আসছে। দারিদ্রতা দূর করতে হলে প্রথিমে অজ্ঞতা ও নিরক্ষরতা দূর করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থা সম্প্রসারণে ব্রাক, ইউনিসেফ, ফেয়ার প্রভৃতি NGO গুলো স্কুল, ঘর নির্মাণ, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বই, খাতা, কলম বিতরণ করে গ্রামীণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক বর্তমানে শিক্ষার উন্নয়নের জন্য উচ্চ শিক্ষা, ঋণ ও বৃত্তির ব্যবস্থা চালু করেছে। এছাড়া NGO গুলোর রয়েছে বয়স্ক শিক্ষা কর্মসূচি যার মাধ্যমে বয়স্কদের দেয়া হচ্ছে শিক্ষার আলো।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধঃ দেশের কৃষি ও শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে NGO গুলো দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করতে কিছুটা সক্ষিম হয়েছে। যার ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুঃখ কিছুটা হলেও লাঘব করা সম্ভব হচ্ছে।
বনায়নঃ NGO সংস্থাসমূহ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে পথে প্রান্তরে বিপুল পরিমাণ বৃক্ষরোপণ করছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে তারা সরকারের জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ দেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ও বীড়াট ভূমিকা রাখছে।
ত্রাণ ও পুর্নবাসন কার্যঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগে NGO সমূহ তাদের যথাসাধ্য সম্পদ নিয়ে ত্রাণ ও পূর্নবাসনে এগিয়ে আসে। এছাড়াও বন্যা, দুর্গত ও উপকূলীয় অঞ্চলে সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণের মাধ্যমে আশ্রয়হীন মানুষকে দেওয়া হয়েছে আপাতকালীন আশ্রয়ের আস্থা। NGO ও গুলো এপর্যন্ত উপকূলীয় জেলাসমূহে ২৭০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছে।
গণসচেতনতা বৃদ্ধিঃ অজ্ঞতা ও নিরক্ষরতার কারণে আমাদের দেশের জনগণ বিভিন্ন কুসংস্কারে বিশ্বাসী। তারা তাদের মধ্যে বিরাজমান সুপ্ত প্রতিভা ও ক্ষমতা সম্পর্কে একেবারেই অসচেতন। NGO সমূহ এরূপ পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। ফলে জনগণের মাঝে আত্ননির্ভরশীল হওয়ার চেতনা সৃষ্টি হয়। তারা আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে এগিয়ে আসে।
স্বনির্ভর কর্মী সৃষ্টিতেঃ কর্মসংস্থানের অভাবে আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও অশিক্ষিত যুবক বেকারত্বের অভিশাপে ভুগছে। NGO সমূহ এসব বেকার যুবকদের কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পুঁজি প্রদানের মাধ্যমে স্বনির্ভর কর্মী সৃষ্টিতে সহায়তা ভূমিকা রাখে।
স্বাস্থ্য সেবাঃ স্বাস্থ্য হলো উন্নয়নের চাবিকাঠি। এ লক্ষ্যে NGO গুলো স্বাস্থ্য সেবা সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। বেশকিছু NGO সমূহ পরিবার পরিকল্পনা, কুষ্ঠ রোগ নিরাময়,শিশু ও মায়ের সেবা, শিশুদের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি বিষয়ে জ্ঞানদান ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ প্রভৃতি কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণঃ জনবিস্ফোরণ বাংলাদেশের প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম। NGO গুলো জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করেছে।
অর্থনৈতিক অবকাঠামোগত উন্নয়নঃ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ব্যতীত অর্থনৈতিক উন্নয়ন আশা করা যায় না। NGO সমূহ রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট, বাঁধ, সেতু ইত্যাদি নির্মাণ ও সংস্কার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানি সরবরাহ প্রভৃতি উন্নয়ন মূলক কাজে এগিয়ে এসেছে। অবকাঠামোগত এসব উন্নয়নের ফলে কৃষি, শিল্প, ব্যবসা বাণিজ্য তথা সামগ্রিক অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে।
NGO কর্মকান্ডের সমালোচনা/ সীমাবদ্ধতাঃ
১) কৃষির উন্নয়নে ব্যাপকতার অভাবঃ দেশের কৃষি উন্নয়নে NGO এর ভূমিকা কম। ৪০০এর বেশি সংস্থা সত্ত্বেও মাত্র ৩৭টি সংস্থা দেশের কৃষি উন্নয়নে সামান্য নজর রাখছে। অথচ কৃষিনির্ভর এই দেশে কৃষির উন্নয়ন ছাড়া অর্থনীতির স্বাবলম্বিতা কল্পনাতীত।
২) গবেষণার ফলাফল প্রকাশ না করাঃ সঞ্চয় বৃদ্ধিতে NGO ভূমিকা রাখে বলে দাবী করা হয়। প্রকৃতপক্ষে অনেক NGO তাদের কোন গবেষণারর ফলাফল প্রচার করে না। দু’একটি সমীক্ষায় দেখা যায় Target group যে পরিমাণ সঞ্চয় করে ঋণের পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বা সমান।
৩) অপরিবর্তিত অর্থনৈতিক অবস্থাঃ NGO সমূহ তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে গ্রামীণ শ্রমিকদের অংশগ্রহণের হার বাড়াতে পারেনি। এছাড়াও তারা ভূমিহীন বর্গাচাষীদের অবস্থার তেমন উন্নয়ন করতে পারেনি।
৪) বৈদেশিক সাহায্যের ধারা পরিবর্তনঃ NGO এর আবির্ভাব থেকে দেশে বৈদেশিক সাহায্যের ধারা পাল্টে যাচ্ছে। আগে সরাসরি সরকারকে সাহায্যে দেয়া হত কিন্তু এখন দাতাদেশগুলো নিজস্ব এজেন্টের মাধ্যমে NGO এর হাতে তাদের সাহায্য তুলে দিতে বেশি ইচ্ছুক।
৫) কূটকৌশলী দূরদর্শিতাঃ NGO মূলনীতি হল পানি ছিটিয়ে দিয়ে বাজারে শাক বিক্রেতা যেভাবে শাক বাঁচিয়ে রাখে ঠিক তদ্রুপ NGO গুলো সাহায্যের নামে কূটকৌশলের মাধ্যমে দেশের জনগণকে স্বাবলম্বী না করে নির্ভরশীল করে রাখতে চায়।
৬) বিকল্প ব্যবস্থা অবহেলিতঃ প্রতিবছর NGO সমূহ হাজার কোটিরও বেশি টাকা ব্যয় করছে। যদি ঐ টাকায় প্রতিটি থানায় একটি করে শিল্প কারখানা স্থাপন করা হত তবে সহজেই শিল্প বিপ্লব সংগঠিত হত। অথবা কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করেও দারিদ্রতা নির্মূল করা যেত। কিন্তু এসব বিকল্প ব্যবস্থা অবহেলিত।
৭) সীমান্ত কাজ করার প্রবণতাঃ বেশিরভাগ NGO সমূহ সীমান্তে কাজ করতে বেশী আগ্রহী। এদের দ্বারা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর কোন বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকের ধারণা।
৮) ধর্মান্তরিত করার প্রয়াসঃ NGO মধ্যে অনেকগুলোই মিশনারি। যারা ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে সেবা দান করে। এসব মিশনারিগুলো সেবা প্রদানের নামে খ্রিষ্টান ধর্ম শিক্ষা দেয় এবং আস্তে আস্তে অভাবগ্রস্ত মানুষদের খাদ্য ও অর্থের লোভে ধর্মান্তরিত করে।
৯) বুদ্ধিজীবীদের পক্ষে আনার চেষ্টাঃ NGO গুলো দেশের একশ্রেণির বৃদ্ধিজীবীকে উচ্চ সম্মানিতে তাদের পক্ষে কাজ করিয়ে নিয়ে সমর্থন নিচ্ছে। রাষ্ট্রীয় বিপর্যয়ে এসব বুদ্ধিজীবী দেশের স্বার্থের কথা নাও বলতে পারে।
১০) সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টঃ NGO গুলো এদেশের আলেম, দ্বীনদার ও পুরোহিতদের বিরুদ্ধ যেমন তেমন বাক্য উচ্চারণ করে এবং তাদের বিরুদ্ধে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিষয়ে তোলে বলে অভিযোগ পাওয়া যায় যা বাংলাদেশের ধর্মীয় হস্তক্ষেপ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের কারণ হতে পারে।
১১) সামাজিক অবক্ষয়ঃ NGO গুলো বাংলাদেশের গ্রামীণ মহিলাদের পর্দার বাইরে এনেছে। সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের অনেক ক্ষেত্রে অশান্তি বাড়িয়েছে এবং বিবাহ বিচ্ছেদের হারও বাড়িয়েছে যা মোটেও কাম্য নয়।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের মত একটি অনুন্নত দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে NGO সমূহের প্রয়োজন বা অবদান অনস্বীকার্য। তবে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে দেশের মানুষকে শিক্ষিত করে উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তন এনে ধীরে ধীরে NGO নির্ভর কমাতে। এতে নিজেদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ হবে। এবং দেশের উন্নতি সাধন করা সম্ভব হবে।